বাবাহারা সন্তানের জন্ম: নিহত এনওয়াইপিডি অফিসার দিদারুলের পরিবারে শোক আর আশার আলো

ম্যানহাটনের মিডটাউনের রক্তাক্ত সেই দিনের মাত্র এক মাস পর, পৃথিবীর আলো দেখলো নিহত বাংলাদেশি-আমেরিকান ডিডেক্টিভ পুলিশ অফিসার দিদারুল ইসলামের নবজাতক পুত্রসন্তান।
রবিবার সকালে হাসপাতালের হাসির বদলে কান্না ভেসে এলো, কিন্তু সেই কান্নার সুরের সঙ্গে মিশে ছিল গভীর এক শূন্যতা—কারণ, সন্তান জন্ম নিলেও বাবার মুখ আর দেখা হলো না তার।
দিদারুল ইসলাম ছিলেন এনওয়াইপিডির নিউইয়র্ক সিটির ব্রঙ্কসের ৪৭তম প্রিসিঙ্কটের পুলিশ কর্মকর্তা। বাংলাদেশ থেকে অভিবাসী হয়ে আসা এই পুলিশ অফিসার মাত্র সাড়ে তিন বছরের কর্মজীবনেই প্রমাণ করেছিলেন দায়িত্ব, সাহস আর দেশপ্রেম। কিন্তু গত মাসে ম্যানহাটনের পার্ক অ্যাভিনিউর একটি অফিস ভবনে ঘটে যাওয়া ভয়াবহ গুলিবর্ষণে তিনিনিহত হন। ওই ঘটনায় নিহত হন আরও তিনজন।
দিদারুলের স্ত্রী তখন আট মাসের অন্তঃসত্ত্বা। সেই মর্মান্তিক ঘটনার পরদিন থেকেই দোয়া-প্রার্থনায় কেটেছে পরিবার ও কমিউনিটির দিনগুলো। অবশেষে রবিবার, দিদারুলের স্ত্রী তৃতীয় পুত্রসন্তানের জন্ম দেন।
নিউইয়র্ক সিটির মেয়র এরিক অ্যাডামস হাসপাতালে গিয়ে পরিবারের সঙ্গে সময় কাটান। তিনি বলেন, “সৃষ্টিকর্তা রহস্যময়ভাবে কাজ করেন। দিদারুলের পরিবার আমাদেরই পরিবার। নিউইয়র্ক সিটি তাদের পাশে থাকবে।”
এনওয়াইপিডি কমিশনার জেসিকা টিশ নবজাতকের ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, “ট্র্যাজেডির ভেতর থেকে নতুন জীবনের আগমন ঘটলো।”

কমিউনিটিতেও এই জন্মকে দেখা হচ্ছে এক আশার আলো হিসেবে। যদিও শোকের ভার চেপে আছে পরিবারের প্রতিটি মুহূর্তে, তবে নবজাতকের আগমন দিদারুলের অসমাপ্ত স্বপ্নের ধারক হয়ে এসেছে।
উল্লেখ্য, নিউইয়র্ক সিটির ইতিহাসে প্রথম বাংলাদেশি হিসেবে কর্তব্যরত অবস্থায় প্রাণ হারালেন দিদারুল ইসলাম। তাকে মরণোত্তর ডিটেকটিভ পদে ভূষিত করা হয়েছে।
আজ দিদারুলের আরও দুই পুত্রসন্তানের ও নবজাতক পুত্র বেড়ে উঠবে বাবার গল্প শুনে—একজন সাহসী অভিবাসী পুলিশ অফিসারের গল্প, যিনি জীবন দিয়ে নিউইয়র্ক সিটিকে সুরক্ষিত রেখেছিলেন।
August 2025
৩৭-০৫ ৭৩ স্ট্রীট, জ্যাকসন হাইটস, নিউইয়র্ক-১১৩৭২, ফোন: ৬৪৬৩০৯৬৬৬৫, সার্কুলেশন ও বিজ্ঞাপন ইমেইল: [email protected]